Blog

শুক্রবার হঠাৎ দীপালির ফোন। বলছে, “দেখ না রিনা, যখনই ভাবি নখ বড় করব, নখের ডগা ভেঙে যায়। কী করি বল তো?” বললাম, “কিছু ভাবিস না নখে রোজ একবার করে ভিনিগার লাগিয়ে নিবি। নখ মজবুত হবে।”

সেদিন শখ করে চা বানাতে গিয়ে আমার কর্তা হাতে চা ফেলে “বাবা গো মা গো” বলে চিল চিৎকার জুড়ে দিয়েছিলেন। দেখলাম সত্যি হাতটা পুড়েছে। যাতে ফোস্কা না পড়ে তার জন্য ফ্রিজ থেকে বরফ বের করে ঘষে দিলাম পোড়া জায়গাতে।

গত পরশু দুপুরে একটু বেরিয়েছিলাম। গেছিলাম খুড়তুতো ননদের বাড়ি সল্টলেকে। বাড়ি ফিরে দেখি ট্যান পড়ে গেছে মুখে-হাতে-গলায়। আমি একটুও কিছু না ভেবে একটা টমেটো বেটে নিয়ে রোদে পোড়া জায়গাগুলোতে লাগিয়ে দিলাম। সত্যি ম্যাজিকের মতো ট্যান উধাও!

আমার নিচের ফ্ল্যাটের কেয়া সেদিন বলছিল,’রিনা অ্যান্টি জানো আমার বরের জন্য আলুর দম বানাতে গেলাম সেদিন। নতুন আলু কাটতে গিয়ে হাত খসখসে হয়ে গেছে। কী যে করি?’ ‘মধু আর চিনি একসঙ্গে হাতে লাগিয়ে ঘষতে থাকবে, যতক্ষণ না চিনি গলে যায়… এভাবেই হাত মসৃণ করা যাবে।’ বললাম কেয়াকে।

আমার বোনঝি ঝিলিক সেদিন ফোনে বলল,’ও মাসি কই মাছ কাটতে গিয়ে আমার হেল্পিং হ্যান্ড আরতির হাতে কাঁটা ফুটেছে। কী করি বল তো?’ ব্ললাম,’কী আবার করবি, ওই মাছটার চোখটাকে গেলে ব্যথা জায়গায় লাগিয়ে দে ব্যথা কমে যাবে।’ এর চেয়ে ভাল কিছু হতেই পারে না কই-এর ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার।

আমার সেজ বৌদি আমার বাড়ি এসে রান্নাঘরে ঢুকে বলেই ফেলল,’এই তোমার রান্নাঘরের স্ল্যাব এত পরিষ্কার কী করে? তেল চিটচিটে নয়। আমার স্ল্যাব তো দু’দিনেই তেল চিটচিটে হয়ে যায়।’ মনে মনে ভাবলাম ন্যাকা। সামনে বললাম,’চা হয়ে যাওয়ার পর, ফেলে দেওয়া চা পাতা দিয়ে স্ল্যাব ঘষে ঘষে পরিষ্কার করলে, তেল চিটচিটে ভাব আর থাকবে না।’

নিচের ফ্ল্যাটের ঘোষ গিন্নি সেদিন বলছিল, ওনার মেয়ে নাকি প্রায়ই গ্যাসে দুধ ফুটতে দিয়ে টিভি দেখে, আর উথলে উঠে সব দুধ পড়ে যায়। শুনে কি আর চুপ করে থাকা যায়? বললাম,’মেয়েকে বোলো দুধ ফোটানোর আগে পাত্রের কানায় একটু মাখন লাগিয়ে দিতে, তাহলে আর দুধ উথলে পড়বে না।’

সেদিন আমার বোনঝি ঝিলমিল আমাকে ফোন করে বলল,’মাসি চিকেন দো পেঁয়াজা বানাতে গিয়ে কড়াই পুড়িয়ে ফেলেছি, কী করব? নিউইয়র্কে তো আর কাজের লোক পাব না।’ আমি শুনে বললাম,’চিন্তা করিস না! বেকিং সোডা আর জল একটা পাত্রে গুলে পোড়া দাগের ওপর ছড়িয়ে কিছুক্ষণ রেখে দে, তারপর জল দিয়ে ধুয়ে নিলেই পোড়া দাগের হাত থেকে রেহাই পাবি।’…

  কল্পনা বাসন মাজার পরও বাসনে আঁশটে গন্ধ থেকে যাচ্ছিল। রোজ রাতে খেতে বসে আমার কর্তা এই নিয়ে নাক সিটকোয়। শেষে সেদিন আমি কল্পনাকে ব্ললাম,’এই শোনো, এবার থেকে বাসন ধোয়ার পর একটা কাপড়ে ভিনিগার লাগিয়ে মুছে নিলে, বাসনে আর আঁশটে গন্ধ থাকবে না।’ ব্যস, যেই কথা সেই কাজ। আঁশটে গন্ধ উধাও।

  শাশুড়িকে ইমপ্রেস করতে গিয়ে তাঁর জন্মদিনে মোচা চিংড়ি রাঁধবে বলে রিকি পণ করেছিল। রেঁধেছিলও খাসা। সবাই তো খুব প্রশংসা করল। কিন্তু রিকির মনে সুখ নেই। নিজের হাতে মোচা ছাড়াতে গিয়ে যে ম্যানিকিওর করা হাতটার বারোটা বাজিয়েছে। কী করি অ্যান্টি? কী আবার করবি? আপাতত গরম জলে নুন মিশিয়ে হাতটা কিছুক্ষণ চুবিয়ে রাখ। কিন্তু পরের বার…

  পিঙ্কুটা ছেলেবেলা থেকেই বড্ড লোভী। লাল লাল আলুর দম থেকেই গপ্ করে মুখে দিয়েই লাফাতে লাগল। জিভ জ্বলে গেল…। জ্বলবে না, মুখে অরুচি বলে ওনার জন্য বেশ করে ঝাল দিয়ে আলুর দম বানিয়েছি। তুই ওটা খেয়ে ফেললি? নে হাঁ কর, বলে জিভের দুইপাশে নুন মাখিয়ে দিলাম। ব্যস্, নিমেষেই ঝাল পালিয়ে গেল। পিঙ্কুর জন্য আলাদা…

  সেদিন ডাল রান্না করতে গিয়ে ভুল করে দু’বার নুন দিয়ে দিয়েছি। কী করি, কী করি। দুটো বড় বড় আলু খোসা ছাড়িয়ে চার ভাগ করে দিলাম ডালে ফেলে। কিছুক্ষণ বাদেই দেখি আলু দুটো সেদ্ধ হয়ে গেছে। আর তার সঙ্গে সঙ্গে ডালের নুনও ঠিক হয়ে গেছে। সবজান্তা বলে আমার থেকেই লোকে কীনা টিপস্ নেয়। আর আমি…

  উপকরণঃ- গোবিন্দভোগ চাল (১ কাপ), সোনামুগ ডাল (১ কাপ), পনির (১ কাপ), ভাজা চিনাবাদাম (১ কাপ, খোসা ছাড়ানো), মটরশুঁটি (১/২ কাপ), মাখন (৩/৪ চামচ), সয়াবিন সেদ্ধ করে ভাজা (১/২ কাপ), জিরে বাটা (১ চা-চামচ), আদা বাটা (১ চা-চামচ), ধনে বাটা (১ চা-চামচ), নুন (স্বাদ অনুযায়ী), গরম মশলা (এক চিমটে), পাঁচফোড়ন (অল্প), শুকনো লঙ্কা গুঁড়ো…

  উপকরণঃ- কনডেন্স মিল্ক (২০০ গ্রাম), মিল্ক পাউডার (আধ কাপ), মাখন বা ঘি (আধ চামচ), কেশর (অল্প, চাইলে দিতে পারেন), জায়ফল গুঁড়ো (সামান্য), ছোট এলাচ গুঁড়ো। প্রণালীঃ- একটা মাইক্রোআভেনপ্রুফ বাটিতে কনডেন্স মিল্ক, মিল্ক পাউডার আর ঘি নিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। এবারে এই মিশ্রণটা মাইক্রোআভেনে ১ মিনিট ঘুরিয়ে নিন। এরপর এই মিশ্রণে মেশান ছোট এলাচ…

সকালে ঘুম ভাঙল মিতিনের ফোনে। হ্যালো, বলতেই হাউমাউ কান্না। ও আন্টি আজ সন্ধ্যাবেলায় আমার খুঁতখুঁতে জাঁদরেল শাশুড়ি আসছে আমার বাড়িতে, ঘর না হয় গোছালাম কিন্তু কাচের জিনিসপত্র মানে আয়না, জানলা, ক্রকারিজ যে কিছুতেই চকচক করতে পারছি না। কী হবে? গা জ্বলে যায়, সাতসকালে ফোন করে এই নাকি কান্না। আরে খবরের কাগজ জলে ভিজিয়ে জল চিপে…

সেদিন বিনিদের বাড়ি গেছি একটা গেট টুগেদার অ্যাটেন্ড করতে। ভাবলাম সকাল সকাল গেলে মেয়েটাকে একটু কাজে হেল্প করা যাবে। রান্নাঘরে গিয়ে দেখি ওর রান্নার দিদি একগাদা পেঁয়াজ কাটতে বসে নাকের জলে চোখের জলে করছে। ইস্, মাগো দেখেই কী ঘেন্না, কী ঘেন্না। তা পেঁয়াজের খোসা ছাড়িয়ে মিনিট পনেরো জলে ভিজিয়ে রাখলেই তো হয়, তা না খাবার…