কাঁচকলার খোসা বাটা দিয়ে চিংড়ির কোপ্তা
রুমকি আর সানি চাকরি সূত্রে দুজনে দুবাই অভিবাসী। দুজনের এখন ওয়ার্ক ফ্রম হোম। কিন্তু ঘরে বসেও ঘরছাড়া। লকডাউনে ফ্লাইট না চলায় কলকাতা ফেরা দূর স্বপ্নের মতো আবছা। সানি কাজের মাঝেই কলকাতায় ওদের সাদার্ন অ্যাভিনিউ- এর বাড়ি, পাশের গলির মহারানীর গরম কচুরি, সাঁই বাবার মন্দিরের সন্ধ্যারতি, সকালে লেকের ধারে বসে আড্ডা এই সব খুব মিস করে। অন্যদিকে ল্যাপটপ থেকে মুখ সরালেই রুমকির চোখে ভাসে ওদের শ্যামপুকুর স্ট্রিটের শতক প্রাচীন চারতলা বাড়িটা, রাঙা ঠাম্মির মালপোয়া, মদনমোহন মন্দিরের পুষ্পভোগ, কানা ফকিরের নিজের হাতে লাগানো উঠোন জুড়ে ছড়িয়ে পড়া কাঠচাঁপার গন্ধ আর মিস করে মাকে, বাবাকে, শ্বশুর বাড়ির মা আর দেওরকে। এইসবের মাঝেই লকডাউনে একধরনের বিষন্নতা গিলে নিচ্ছিল ওদের। হঠাৎই সেদিন শাশুড়ি মায়ের সঙ্গে ভিডিও কল করে কাঁচকলার খোসা আর কুচো চিংড়ির কোপ্তার ঝাল ঝাল রেসিপি বানিয়ে খাবার টেবিলে সানি কে চমকে দিল।সানিও আঙুল চেটে এই কোপ্তাকারি খেয়ে চোখের জলে নাকের জলে ভাসমান। সে কী ঝালের জন্য না মায়ের স্মৃতিতে, তা কিন্তু এখনও জানা নেই রুমকির।
উপকরণ: কাঁচকলার খোসা ৩টে,কুচো চিংড়ি ১০০ গ্রাম, আদা পেঁয়াজ (ঝিরি ঝিরি করে কাটা) ১৫০ গ্রাম, ধনেপাতা কুচি, নুন, হলুদ, সর্ষের তেল ২ টেবিল চামচ, গরম মশলা, চিনি, তেজপাতা, নারকেলের দুধ আধ কাপ, কাঁচালঙ্কা কুচি ৪টে, ঘি ইচ্ছে মতো।
প্রণালী: কাঁচকলার খোসা সেদ্ধ করে মিক্সিতে বেটে নিন। চিংড়ি ধুয়ে পরিষ্কার করে কুচি করে সেদ্ধ করে রাখুন। চিংড়ির সঙ্গে নুন, পেঁয়াজ, কাঁচালঙ্কা ও ধনেপাতা মেখে নিয়ে ওর মধ্যে কাঁচকলার খোসা সেদ্ধ মেখে কোপ্তার মতো বানিয়ে সর্ষের তেলে ভেজে নিন। আদা-পেঁয়াজ- হলুদ ও গরম মশলা একসঙ্গে বেটে রাখুন। সসপ্যানে গরম তেলে তেজপাতা আর বাটা মশলা সাঁতলে নিন। এরপর হাল্কা জল দিয়ে নেড়ে নিন। এবার ওতে দিন নুন- চিনি আর নারকেলের দুধ । আঁচ কমিয়ে কাঁচকলার খোসা চিংড়ি কুচির কোপ্তা গুলো গ্রেভিতে ছেড়ে ১০ মিনিট ফুটতে দিন। গ্রেভি গাঢ় হয়ে এলে ওপর থেকে ঘি ছড়িয়ে নামিয়ে নিন।