আম্রপালি ইলিশ
তাতানের জ্বর কমার কোনো লক্ষ্মণ না দেখে ওর বাবা ওকে পাড়ার রসময় ডাক্তারের চেম্বারে নিয়ে গেলেন। রসময় মিত্তির এই ভবানীপুর অঞ্চলের নাম করা চিকিৎসক। খুব নামডাক।যখন বাড়ির সকলে, পাড়ার পাঁচ জন, তাতানের বন্ধু বান্ধবরা, এমনকি ওর দিল্লি প্রবাসী পেশায় চিকিৎসক কাকা পর্যন্ত ভেবেই ফেলেছিলেন যে তাতান কোরোনা আক্রান্ত, তখন সকল জল্পনা- ভাবনা- ভয় – সন্দেহ উড়িয়ে দিয়ে আপাত গম্ভীর রসময় ডাক্তার তাঁর ডিস্পেন্সারির টেবিল চাপড়ে বললেন ” এ তো ভাই ভাইরাল ফিভার। মাথায় সর্দি বসে গিয়ে জ্বর, গায়ে বেদনা, মাথা যন্ত্রনা। কোভিডের কোনও ছিটেফোঁটাও নেই “। সকলে আশ্বস্ত হলো। নিশ্চিন্ত হলো তাতান। কিন্তু এতো কড়া কড়া ট্যাবলেট গিলে বিছানা থেকে মাথা তোলা দায় হলো ছেলের। মা যা রান্নাই করেন সব তেতো বিষ লাগে জিভে। উপায়! ভাবতে ভাবতে তাতানের মা শেষটায় মোক্ষম চাল চাললেন। বাবাকে দিয়ে বাজার থেকে ইলিশ মাছ আনিয়ে রেঁধে ফেললেন আম আর ইলিশের যুগলবন্দী আম্রপালি ইলিশ। তাতান ইলিশ খুবই ভালোবাসে। তাই এদিন অরুচির মুখে রুচি ফেরাতে বিশেষ বেগ পেতে হয়নি বোস দম্পতির।
উপকরণ: ইলিশ মাছ ২ টুকরো, কাঁচা আম ছোট ১টা, কালো সর্ষে ১ চামচ, সর্ষের তেল আধ কাপ, কাঁচা লঙ্কা ২ টো, শুকনো লঙ্কা ২টো, নুন, চিনি ও কারিপাতা।
প্রণালী: মাছ ধুয়ে নুন হলুদ মাখিয়ে সর্ষের তেলে ভেজে নিন। কাঁচা আম ডুমো ডুমো করে কেটে সেদ্ধ করে নিন। সেদ্ধ জল শুদ্ধু আম রেখে দিন। এখন কড়াই তে সর্ষের তেল গরম করে তাতে কালো সর্ষে, শুকনো লঙ্কা,কাঁচা লঙ্কা ও কারিপাতা ফোড়ন দিন। ফোড়নের গন্ধ নাকে আসলে সেদ্ধ করা জল সমেত কাঁচা আম গুলো কড়াই তে দিন। ঝোল ফুটতে শুরু করলে ওর মধ্যে ইলিশ মাছ নুন ও চিনি ছেড়ে দিন।ভালো করে ফুটে উঠলে এবং জল শুকিয়ে এলে আঁচ বন্ধ গরম ভাতের পাতে পরিবেশন করুন।