হ্যাংলা-র রাজসিক পিকনিক
জয়পুরিয়া কলেজ ক্রস করতেই ভিড়টা শুরু হয়েছিল। সক্কাল সক্কাল। একে একে দলদল ধুকে যাচ্ছিল শোভাবাজার রাজবাড়ির গেট পেরিয়ে। হ্যাংলা হেঁশেল-এর পিকনিক বলে কথা। গেট থেকে শুরু করে গোটা রাজবাড়িই সাজানো লাল-সাদা বেলুনে। প্রত্যেক অতিথিদের অভ্যর্থনা জানাতে হাজির ‘ছোটা ভীম’। হ্যাংলার দলবলে ভরেছিল শোভাবাজার রাজবাড়ির আনাচ-কানাচ। ধুতি-পাঞ্জাবি পরে অতিথিদের স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন শোভাবাজার রাজবাড়ির পক্ষ থেকে তাপস বোস। সক্কাল সক্কাল চলে আসা পিকনিক দলের উদরপূর্তির জন্য ছিল গরম গরম রাধাবল্লভী, কড়াইশুঁটি দেওয়া আলুর দম আর ইয়া বড় সাইজের শক্তিগড়ের ল্যাংচা। পুরো পিকনিকের তত্ত্বাবধানের জন্য আমরা পাশে পেয়েছিলাম হ্যাংলা ক্লাবের কয়েকজন সদস্যাকে। প্রাতঃরাশ মানে ব্রেকফাস্ট সেরেই সোজা মজাদার গেম শোতে ধুকে পড়া। যদিও এর মাঝেই হ্যাংলার পিকনিকে হাজির অভিনেত্রী তনিমা সেন এবং রন্ধনশিল্পী শর্মিষ্ঠা দে। তাদেরকে বিচারক আসনে রেখেই শুরু ‘এক মিনিট শুধু বাংলায় কথা বলা’ পর্ব। ২১ শে ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবস হওয়াতেই এই খেলার আয়োজন। বাংলায় কথা বলতে গিয়ে কেউ হোঁচট খেলেন দেদার আবার কেউ কেউ শুদ্ধ বাংলায় কথা বলে ছিনিয়ে নিলেন প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কার। খেলার মাঝেই পিকনিকে হাজির হলেন সুদীপা মুখার্জি চ্যাটর্জি। তার খানিক আগেই অবশ্য চলে এসেছিলেন রন্ধন বিশেষজ্ঞা বিপাশা মুখার্জি এবং জয়শ্রী গাঙ্গুলি। হাজির ছিলেন শেফ দেবাশিষ কুণ্ডু এবং শেফ জয়ন্ত ব্যানার্জি।
এরপরেই ছিল পিকনিকের অল-টাইম ফেভারিট খেলা মিউজিকাল চেয়ার। তবে তার আগে অবশ্য প্রত্যেকের জন্য হাজির হয়ে গিয়েছিল গরম গরম ফিশ ফ্রাই এবং চা। সেটা খেলেই সবাই ক্লান্ত। আরে বাবা বেলা ৩টে বাজলে খিদে তো পাবেই। ব্যস শুরু লাঞ্চ। আর লাঞ্চ মানেই নাকে খাবারের সুঘ্রাণ। একে একে প্রত্যেকের পাতে পড়ল মাটন পোলাও, চিকেন, ভেটকি মাছের পাতুরি, কাঁচা আমের চাটনি, পাঁপড়, লাল দই আর গিটস-এর গোলাপজাম। এই রাজকীয় ভোজের পর পান না হলে কি চলে? মোটেও না, তাই ছিল পানও। উদরপূর্তির পর ছিল উপস্থিত সদস্যাদের র্যাম্প ওয়াক। জাস্ট জমে গেল।
হ্যাংলা হেঁশেল-এর পক্ষ থেকে এই ধরনের আয়োজন প্রথমবারের জন্য। প্রথমবারের উচ্ছাস ছিল দেখার মতো। এই উচ্ছাস আর ভালবাসা আমাদের পথ চলার পাথেয়।