Fish Tribute for Hanglas
ফিস নিয়ে ফিস ফাঁস:
বাজারে গিয়ে দরাদরি করে মাছের কানকো দেখে মাছ না কিনলে যেন ঠিক পোষায় না। তারপর মাছওয়ালার সঙ্গে মাছের আঁশ ছাড়ানো নিয়ে ঝামেলা করা। ওজন ঠিক আছে কিনা তা দাঁড়িপাল্লায় বারবার করে দেখে তৃপ্তি সহকারে মাছের থলি হাতে বাড়িতে ফেরা। এই পুরোটাই বাঙালি মাছ বাজারুদের কমন বৈশিষ্ট্য। সেই মাছ নিয়ে গিন্নি যদি চিল্লামেল্লি করে তাও সই – কিন্তু মাছটা ভাই চাই-ই। হেঁশেলের অন্দরমহলে মাছের যা আদর তা অন্য কোনও প্রাণীর প্রতি থাকে না বললেই চলে। আর মাছ সম্পর্কে বাঙালিদের চিরকাল প্রশ্রয় মনোভাব। পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকুক না কেন সপ্তাহ শেষে একবার মাছ সে খাবেই। ‘ভূতের ভবিষ্যত’ সিনেমায় বাঙালি ভূতও পদ্মার ইলিশ দেখে থাকতে না পেরে সোজা বাজারে গিয়ে মাছ কিনে ফিরেছিল। মাছের সঙ্গে দোস্তি আমাদের অনেকের। রুগীর পথ্য থেকে অনুষ্ঠান বাড়ির ভোজ সভায় তার অবাধ গতিবিধি। ঝাল থেকে ঝোল, কালিয়া থেকে আচার সব কিছুই আছে এর মধ্যে। তবে মাছের ওপর যে বাঙালিদের কেবল মাত্র একচেটিয়া অধিকার সেটা ভাবা ঘোরতর অন্যায়। আন্তর্জাতিক টেবিলেও এর সমান কদর। বাঙালির রুই কাতলার সঙ্গে সমান ভাবে পাল্লা দেয় টুনা,ট্রাউট,স্যামন। রান্নার পদ্ধতি দেশ বিশেষে নানা রকম, সেইসঙ্গে ভিন্ন তার স্বাদ। এপার বাংলা ওপার বাংলার চিংড়ি ইলিশের দ্বন্ধ সেই ঘটি বাঙালদের রসনাকেই মনে করায়, যখন মায়ের হাতের ইলিশ পাতুরির সঙ্গে তুলনা হয় জমিদার বাড়ির হেঁশেলের চিংড়ি মাছের মালাইকারির। আবার এই মালাইকারি রান্না তাও ইংরেজদের রান্নাঘরের বাঙালি পাচকদের হাত থেকেই এসেছে। মালাই + কারি। ইংরেজদের কারি তার সঙ্গে বঙ্গীয় ডাবের শাঁস।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘ছেলেবেলা’ গ্রন্থে বলেছেন, ‘জ্বর হওয়ার তিনদিন পর পথ্য ছিল, মৌরলা মাছের ঝোল আর গলা ভাত; তাই অমৃতের মত লাগত।’ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর পদ্মানদীর মাঝি গল্পে ইলিশ মাছ ধরার সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন।
পৃথিবীর সর্বকালের হ্যাংলারা মাছ জিনিসটা খুবই পছন্দ করে। আসলে স্বাদ, আর বর্ণের দিক দিয়ে পুষ্টির পরিপূরক এমন খাদ্য নেই বললেই চলে। আমাদের হেঁশেলে সকাল থেকেই চলছে মাছ নিয়ে বিভিন্ন কারিকুরি। আসলে হ্যাংলাদের জন্যে কিছু fish recipes বানাতে হবে। চারদিকে মাছ নিয়ে এত রকম মেলার বা অনুষ্ঠানের আয়োজন হচ্ছে তাই হ্যাংলা ক্লাব ও দাবি জুড়েছে তাদের জন্যও ফিস নিয়ে ফিস ফাঁস করতেই লাগবে। আর তাই তো হ্যাংলা হেঁশেল নিয়ে এসেছে মাছের নানা রকম অথেনটিক রেসিপি। বাটা মশলায় মাছের ঝোল থেকে তেল গড়গরে কালিয়া। আবার মাছের মাথা দিয়ে (ইলিশ) শাক রান্না তেমনি মাছের মাথা দিয়ে ডাল। মুড়োঘন্টর তো টেস্টই আলাদা । তেমনি মাছের বিভিন্ন রকম আন্তর্জাতিক রান্নাও আমাদের হেঁশেলে তৈরি হচ্ছে। হ্যাংলা হেঁশেল তো দেশ কাল সীমানা মানে না, ঢুকে যায় পৃথিবীর বিভিন্ন হেঁশেলে, তুলে আনে সেখানকার রেসিপি। যত্ন করে রান্না ততোধিক যত্ন করে পরিবেশন সঙ্গে আপনাদের সাথে আড্ডা, টুকরো কথা অন্তরঙ্গ মুহূর্ত সব কিছুই আবর্তিত হয় এই হেঁশেলকে ঘিরে। তেল, ঝাল, মশলার সুবাস চায়ের কাপ হাতে অনুচ্চ স্বরে গল্প। আমাদের ভালোবাসেন জানি, আর তাই হ্যাংলা হেঁশেলে বার বার করে ফিরে পেতে চাই আপনাদের। এই হেঁশেল আমাদের সব্বাইকারের।
দেশ কাল সীমানা ভেঙ্গে মাছের সমাদর সর্বকালীন। আর হ্যাংলা হেঁশেলে তাই Fish Tribute সেইসব হ্যাংলাদের জন্যে যারা মাছ বলতে অজ্ঞান, সবার কাছে বিখ্যাত হয় বেড়ালের মত মাছ ভালবাসে বলে।